কুবিতে নবীনদের সকালে বরণ, দুপুরে র্যাগিং

কুবিতে নবীনদের সকালে বরণ, দুপুরে র্যাগিং
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) র্যাগিংয়ের ঘটনা যেন থামছেই না। এবার র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন বাংলা বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার ছাদে বাংলা বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের কিছু শিক্ষার্থী এ ঘটনা ঘটায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন বিষয়টি প্রক্টরিয়াল বডিকে জানালে, তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্তদের হাতেনাতে আটক করেন। পরবর্তীতে উভয় ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে প্রক্টরিয়াল বডি লিখিতভাবে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ চায়।
এর আগে ১ জুলাই বাংলা বিভাগের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের দিনও একই ধরনের র্যাগিংয়ের অভিযোগ ওঠে। এক নবীন শিক্ষার্থী জানান, "প্রথম দিনেই আমার চোখের সামনে দুজন ছাত্রী কাঁদতে কাঁদতে ভেঙে পড়েন। আমরা সবাই একেবারে নতুন, আন্তরিক ব্যবহার দিয়েও তো পরিচয় করানো যেত। ভালোবাসা আর সম্মান জোর করে পাওয়া যায় না।"
তবে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে বলেন, "আমরা ওদের র্যাগ দেইনি, শুধু পরিচয়ের জন্য ডেকেছিলাম। ক্লাসরুম খালি না থাকায় ছাদে নিয়ে গিয়ে কথা বলছিলাম, এমনকি খাবারও দিয়েছি।" তবে প্রতিবেদকের কাছে থাকা অডিও-ভিডিও প্রমাণ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী, সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ‘পরিচয়পর্ব’-এর আড়ালে র্যাগিং চলেছে।
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামসুজ্জামান মিলকি বলেন, "ঘটনাটি সম্পর্কে জেনেছি। বিষয়টি এখন প্রক্টরিয়াল বডির আওতায় রয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" তবে ১ জুলাইয়ের ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, "এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল হাকিম বলেন, "আমরা উভয় পক্ষকে ডেকেছি এবং লিখিতভাবে বিস্তারিত বিবরণ দিতে বলেছি। তদন্তের ভিত্তিতে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।"
এর আগে ২ জুলাই মার্কেটিং বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শ্রেণিকক্ষে দরজা বন্ধ করে র্যাগিংয়ের গুরুতর অভিযোগ উঠে। অভিযোগে বলা হয়, নবীনদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, বেঞ্চে দাঁড় করিয়ে অপমান এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছনা করা হয়। এমনকি এক শিক্ষার্থীর হাতে ডায়ালাইসিস চলমান অবস্থায় ক্যানোলা খুলে দেওয়া হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে শয়ন দাস নামে একজনের নাম উঠে এসেছে।
ঘটনার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত চলাকালীন অভিযুক্তদের ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪শে অক্টোবর র্যাগিং বন্ধে নির্দেশনা দিয়েছে প্রক্টরিয়াল বডি। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে নতুন ও পুরোনো কোনো শিক্ষার্থীর প্রতি শারীরিক, মানসিক, মৌখিক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে যেকোনো প্রকার হেনস্তা (র্যাগিং, বুলিং, বডি শেমিং, ইভটিজিং) নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ পরিচয়পর্বের নামে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ও বাইরে জড়ো করে ম্যানার শেখানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। নবীন শিক্ষার্থী নিজেকে ভিক্টিম মনে করে এমন শারীরিক-মানসিক পীড়ন ও অশোভন আচরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
- Entertainment
- Tech & Startup
- Bangladesh
- International
- Tech & Startup
- Opinion
- Investigative Stories
- Film
- Fitness
- Food
- Games
- Gardening
- Health
- Home
- Literature
- Music
- Networking
- Other
- Party
- Religion
- Shopping
- Sports
- Theater
- Wellness
