কালীগঞ্জে অর্ধশত কোটি টাকার ফাইল গায়েবে শাস্তির বদলে শুধু বদলি
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে সমাজসেবা কার্যালয়ের অর্ধশত কোটি টাকার ফাইল গায়েবের ঘটনার ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পারভীন বেগমের বিরুদ্ধে দাফতরিকভাবে কোন শাস্তি মূলক ব্যবস্থা না নিয়ে শুধু অফিস বদল হয়েছে ।
এই ঘটনায় বিভাগীয় পর্যায়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও সেই তদন্তেও কোনো অগ্রগতি নেই ।
জানাগেছে,গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিনই কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে এইসব গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো গায়েব হয়। ওই ঘটনায় নিজেকে দায়মুক্ত রাখার কৌশল হিসেবে গত ৬ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে ফাইল হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা সাজিয়ে টানা এক মাস পর কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে অভিযুক্ত অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পারভীন বেগম।
এদিকে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ এনে সমাজসেবা কার্যালয় থেকে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল গায়েবের ঘটনায় অভিযুক্ত তৎকালীন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আবদুর রাজ্জাককে ২০২৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর একই পদে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পারভীন বেগমকে ২০২৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর লালমনিরহাট সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে বদলি করা হয়।
কিন্তু অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পারভীন বেগমকে বদলির মাত্র ৭ মাস পর চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল ঢাকার সমাজসেবা অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) শাহেদ পারভেজ স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে আবারো তাকে লালমনিরহাট সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে অব্যাহতি দিয়ে কালীগঞ্জ সমাজসেবা কার্যালয়ে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়।
অনুসন্ধানে জানাগেছে,লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা মোঃআবদুর রাজ্জাক সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে ২০২১ সালের ২ মার্চ কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা পদে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি মন্ত্রী ও তার পুত্রকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা ও আর্থিক অনুদানসহ তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন নামে বেনামে ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসতেন । এমনকি মন্ত্রীপুত্রের মৎস্য প্রজেক্টের কর্মচারীদেরও ৫০হাজার টাকা করে চেক দেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
জুলাই আন্দোলনের দেশে সরকার পতনের পর গত ৬ আগস্ট কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার ফাইল গায়েব হয়। এই ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের হলে পুলিশ ও বিভাগীয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনার তদন্ত নামে । পরে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ২০২৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তাকে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে একই পদে বদলি করা হয় । বর্তমানে তিনি সেখানে কর্মরত আছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পারভীন বেগম এ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের কাশিরাম মৌজার বাসিন্দা। একই মৌজার স্হায়ী বাসিন্দা লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী- কালীগঞ্জ) আসনের তৎকালীন এমপি ও তৎকালীন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। ২০১৮ সালের ৪ জুন পারভীন বেগম সমাজসেবা অধিদপ্তরে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে যোগদান করেন। এরপর একই সালের ২৭ জুন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে একই পদে যোগদান করেন।
নিজ অফিস থেকে ফাইল গায়েবের বিষয়ে অভিযুক্ত পারভীন বেগম এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজী হয়নি।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ মতিয়ার রহমান বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন রংপুর বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক জিলুফা সুলতানাকে ২০২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া লালমনিরহাটে চলতি বছরের ২১ এপ্রিল দুদকের গণশুনানির অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত বিষয়ের তদন্ত প্রতিবেদনসহ অন্যান্য তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়েছে। খোঁজ না পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রকল্পের ওই ফাইলগুলোতে অর্ধশত কোটি টাকারও হিসাব নিকাশ রয়েছে। এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে বদলি ছাড়া আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, পারভীনকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) শাহেদ আলী দুই মাস আগে লালমনিরহাট সদর উপজেলা থেকে কালীগঞ্জে পুনরায় বদলি করেন।
অভিযোগ উঠেছে, লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী- কালীগঞ্জ) আসনের সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, মন্ত্রী পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদসহ পরিবারের সদস্য , আত্মীয় স্বজন ও দলীয় নেতা-কর্মীদের অনুকূলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধাসহ আর্থিক অনুদান সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপাত্ত যাতে ভবিষ্যতে দুদকসহ গোয়েন্দা সংস্থা ও মিডিয়ার নজরে না আসে সেজন্য ৬ আগস্টের ঘটনার অজুহাতে এবং নিজেদের বাঁচানোর কৌশল হিসেবে থানায় জিডি করা হয়। অভিযুক্ত দুইজনকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হলে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন সম্ভব বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষজন ।
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে সমাজসেবা কার্যালয়ের অর্ধশত কোটি টাকার ফাইল গায়েবের ঘটনার ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পারভীন বেগমের বিরুদ্ধে দাফতরিকভাবে কোন শাস্তি মূলক ব্যবস্থা না নিয়ে শুধু অফিস বদল হয়েছে ।
এই ঘটনায় বিভাগীয় পর্যায়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও সেই তদন্তেও কোনো অগ্রগতি নেই ।
জানাগেছে,গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিনই কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে এইসব গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো গায়েব হয়। ওই ঘটনায় নিজেকে দায়মুক্ত রাখার কৌশল হিসেবে গত ৬ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে ফাইল হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা সাজিয়ে টানা এক মাস পর কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে অভিযুক্ত অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পারভীন বেগম।
এদিকে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ এনে সমাজসেবা কার্যালয় থেকে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল গায়েবের ঘটনায় অভিযুক্ত তৎকালীন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আবদুর রাজ্জাককে ২০২৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর একই পদে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পারভীন বেগমকে ২০২৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর লালমনিরহাট সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে বদলি করা হয়।
কিন্তু অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পারভীন বেগমকে বদলির মাত্র ৭ মাস পর চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল ঢাকার সমাজসেবা অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) শাহেদ পারভেজ স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে আবারো তাকে লালমনিরহাট সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে অব্যাহতি দিয়ে কালীগঞ্জ সমাজসেবা কার্যালয়ে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়।
অনুসন্ধানে জানাগেছে,লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা মোঃআবদুর রাজ্জাক সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে ২০২১ সালের ২ মার্চ কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা পদে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি মন্ত্রী ও তার পুত্রকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা ও আর্থিক অনুদানসহ তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন নামে বেনামে ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসতেন । এমনকি মন্ত্রীপুত্রের মৎস্য প্রজেক্টের কর্মচারীদেরও ৫০হাজার টাকা করে চেক দেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
জুলাই আন্দোলনের দেশে সরকার পতনের পর গত ৬ আগস্ট কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার ফাইল গায়েব হয়। এই ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের হলে পুলিশ ও বিভাগীয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনার তদন্ত নামে । পরে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ২০২৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তাকে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে একই পদে বদলি করা হয় । বর্তমানে তিনি সেখানে কর্মরত আছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পারভীন বেগম এ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের কাশিরাম মৌজার বাসিন্দা। একই মৌজার স্হায়ী বাসিন্দা লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী- কালীগঞ্জ) আসনের তৎকালীন এমপি ও তৎকালীন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। ২০১৮ সালের ৪ জুন পারভীন বেগম সমাজসেবা অধিদপ্তরে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে যোগদান করেন। এরপর একই সালের ২৭ জুন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে একই পদে যোগদান করেন।
নিজ অফিস থেকে ফাইল গায়েবের বিষয়ে অভিযুক্ত পারভীন বেগম এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজী হয়নি।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ মতিয়ার রহমান বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন রংপুর বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক জিলুফা সুলতানাকে ২০২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া লালমনিরহাটে চলতি বছরের ২১ এপ্রিল দুদকের গণশুনানির অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত বিষয়ের তদন্ত প্রতিবেদনসহ অন্যান্য তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়েছে। খোঁজ না পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রকল্পের ওই ফাইলগুলোতে অর্ধশত কোটি টাকারও হিসাব নিকাশ রয়েছে। এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে বদলি ছাড়া আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, পারভীনকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) শাহেদ আলী দুই মাস আগে লালমনিরহাট সদর উপজেলা থেকে কালীগঞ্জে পুনরায় বদলি করেন।
অভিযোগ উঠেছে, লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী- কালীগঞ্জ) আসনের সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, মন্ত্রী পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদসহ পরিবারের সদস্য , আত্মীয় স্বজন ও দলীয় নেতা-কর্মীদের অনুকূলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধাসহ আর্থিক অনুদান সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপাত্ত যাতে ভবিষ্যতে দুদকসহ গোয়েন্দা সংস্থা ও মিডিয়ার নজরে না আসে সেজন্য ৬ আগস্টের ঘটনার অজুহাতে এবং নিজেদের বাঁচানোর কৌশল হিসেবে থানায় জিডি করা হয়। অভিযুক্ত দুইজনকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হলে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন সম্ভব বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষজন ।
কালীগঞ্জে অর্ধশত কোটি টাকার ফাইল গায়েবে শাস্তির বদলে শুধু বদলি
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে সমাজসেবা কার্যালয়ের অর্ধশত কোটি টাকার ফাইল গায়েবের ঘটনার ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পারভীন বেগমের বিরুদ্ধে দাফতরিকভাবে কোন শাস্তি মূলক ব্যবস্থা না নিয়ে শুধু অফিস বদল হয়েছে ।
এই ঘটনায় বিভাগীয় পর্যায়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও সেই তদন্তেও কোনো অগ্রগতি নেই ।
জানাগেছে,গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিনই কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে এইসব গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো গায়েব হয়। ওই ঘটনায় নিজেকে দায়মুক্ত রাখার কৌশল হিসেবে গত ৬ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে ফাইল হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা সাজিয়ে টানা এক মাস পর কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে অভিযুক্ত অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পারভীন বেগম।
এদিকে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ এনে সমাজসেবা কার্যালয় থেকে গুরুত্বপূর্ণ ফাইল গায়েবের ঘটনায় অভিযুক্ত তৎকালীন উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আবদুর রাজ্জাককে ২০২৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর একই পদে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পারভীন বেগমকে ২০২৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর লালমনিরহাট সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে বদলি করা হয়।
কিন্তু অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পারভীন বেগমকে বদলির মাত্র ৭ মাস পর চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল ঢাকার সমাজসেবা অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) শাহেদ পারভেজ স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে আবারো তাকে লালমনিরহাট সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে অব্যাহতি দিয়ে কালীগঞ্জ সমাজসেবা কার্যালয়ে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়।
অনুসন্ধানে জানাগেছে,লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা মোঃআবদুর রাজ্জাক সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে ২০২১ সালের ২ মার্চ কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা পদে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই তিনি মন্ত্রী ও তার পুত্রকে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা ও আর্থিক অনুদানসহ তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন নামে বেনামে ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসতেন । এমনকি মন্ত্রীপুত্রের মৎস্য প্রজেক্টের কর্মচারীদেরও ৫০হাজার টাকা করে চেক দেয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে।
জুলাই আন্দোলনের দেশে সরকার পতনের পর গত ৬ আগস্ট কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার ফাইল গায়েব হয়। এই ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের হলে পুলিশ ও বিভাগীয় সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনার তদন্ত নামে । পরে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ২০২৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তাকে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে একই পদে বদলি করা হয় । বর্তমানে তিনি সেখানে কর্মরত আছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পারভীন বেগম এ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের কাশিরাম মৌজার বাসিন্দা। একই মৌজার স্হায়ী বাসিন্দা লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী- কালীগঞ্জ) আসনের তৎকালীন এমপি ও তৎকালীন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। ২০১৮ সালের ৪ জুন পারভীন বেগম সমাজসেবা অধিদপ্তরে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে যোগদান করেন। এরপর একই সালের ২৭ জুন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে একই পদে যোগদান করেন।
নিজ অফিস থেকে ফাইল গায়েবের বিষয়ে অভিযুক্ত পারভীন বেগম এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজী হয়নি।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ মতিয়ার রহমান বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন রংপুর বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক জিলুফা সুলতানাকে ২০২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া লালমনিরহাটে চলতি বছরের ২১ এপ্রিল দুদকের গণশুনানির অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত বিষয়ের তদন্ত প্রতিবেদনসহ অন্যান্য তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করা হয়েছে। খোঁজ না পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন প্রকল্পের ওই ফাইলগুলোতে অর্ধশত কোটি টাকারও হিসাব নিকাশ রয়েছে। এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে বদলি ছাড়া আর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, পারভীনকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) শাহেদ আলী দুই মাস আগে লালমনিরহাট সদর উপজেলা থেকে কালীগঞ্জে পুনরায় বদলি করেন।
অভিযোগ উঠেছে, লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী- কালীগঞ্জ) আসনের সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, মন্ত্রী পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদসহ পরিবারের সদস্য , আত্মীয় স্বজন ও দলীয় নেতা-কর্মীদের অনুকূলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধাসহ আর্থিক অনুদান সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপাত্ত যাতে ভবিষ্যতে দুদকসহ গোয়েন্দা সংস্থা ও মিডিয়ার নজরে না আসে সেজন্য ৬ আগস্টের ঘটনার অজুহাতে এবং নিজেদের বাঁচানোর কৌশল হিসেবে থানায় জিডি করা হয়। অভিযুক্ত দুইজনকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হলে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন সম্ভব বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষজন ।

