• পুরনো বন্ধুত্বের নস্টালজিয়া মিলনমেলা এক বিকেলে ফিরে দেখা এক দশকের স্মৃতি
    সময় কখনও থামে না, কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন থাকে যা বছরের পর বছর পরও ঠিক ততটাই উজ্জ্বল, যতটা ছিল শুরুতে। স্কুলজীবনের বন্ধুত্ব সেই রকমই এক অনুভূতি, যা বয়স, পেশা, কিংবা দূরত্বে ক্ষয় হয় না। এই সত্যেরই সাক্ষী হয়ে রইল মনোহরদীর এক বৃষ্টিভেজা বিকেল, যখন ২০১৫ ব্যাচের ছয়জন পুরনো বন্ধু—আশিক, তামিম, রাকিব, সোহান, তানভীর ও লেখক—দীর্ঘদিন পর আবার একত্র হলেন।
    অপ্রত্যাশিত ডাক, ব্যস্ত দিনের বিরতি
    সেদিন সকালটা ছিল একেবারেই সাধারণ। লেখক ব্যস্ত ছিলেন নিত্যদিনের কাজকর্মে। হঠাৎ ফোন বেজে ওঠে—ওপাশে বন্ধু তানভীর। খবর দিল, তারা মনোহরদী আসছে। তানভীর কেবল একজন বন্ধু নন, বরং জীবনের অন্যতম কাছের সঙ্গী। খবর শুনেই লেখকের মধ্যে কাজ ফেলে দেওয়ার এক অদম্য তাগিদ তৈরি হলো। দীর্ঘদিন পর প্রিয় মুখগুলো দেখার আনন্দ কোনো কিছুতেই ম্লান হতে পারে না।
    পথ আলাদা হলেও বন্ধুত্বের সেতু অটুট
    ২০১৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার পর থেকেই ছয় বন্ধুর জীবন ভিন্ন ভিন্ন পথে এগিয়েছে। আশিক, তামিম, সোহান ও তানভীর ভর্তি হয়েছিলেন নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজে। রাকিব ভর্তি হয় একটি প্রাইভেট কলেজে, আর লেখক ভর্তি হন মনোহরদীর এম এ মজিদ সায়েন্স কলেজে। কলেজজীবনে দেখা-সাক্ষাৎ কমে এলেও যোগাযোগ বজায় ছিল, আর হৃদয়ের কোথাও গেঁথে ছিল সেই পুরনো দিনের গল্পগাথা।
    স্মৃতির প্রাঙ্গণে ফেরা
    মিলনমেলার স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয় এম এ মজিদ সায়েন্স কলেজের প্রাঙ্গণ—যেখানে লেখকের নিজের কলেজজীবনের অনেক স্মৃতি জমা আছে। লাল-সাদা ভবন, খোলা মাঠ, আর গাছের সারি যেন গল্প বলতে থাকে সেই তারুণ্যের দিনগুলোর। এখানেই তারা দাঁড়িয়ে তুললেন কয়েকটি ছবি, যা পরবর্তীতে এই দিনের সাক্ষ্য হয়ে থাকবে।
    আড্ডা, গল্প আর স্কুল-কলেজের দিনগুলি
    একটু পরেই শুরু হলো গল্পের স্রোত। স্কুল জীবনের দুষ্টুমি, প্রথম বেঞ্চের অভিজ্ঞতা, ‘ভূগোল ক্লাসে’ পাস মার্ক নিয়ে হাসাহাসি, ক্যানটিনের চা-সমোসার স্মৃতি—সব উঠে এল হাসি আর আবেগের মিশ্রণে। কলেজ জীবনের কথা বলতে গিয়ে কেউ স্মরণ করলেন হোস্টেলের রাত জাগা, কেউ আবার ‘পড়ার চেয়ে আড্ডা বেশি’ দিনগুলোর গল্প শোনালেন। আলোচনা চলল শিক্ষকদের স্মৃতি, বন্ধুদের হারিয়ে যাওয়া চিঠি, এমনকি পুরনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কথা নিয়েও।
    বর্তমানের পরিচয়, ভবিষ্যতের স্বপ্ন
    আজ সবাই জীবনের পথে অনেকদূর এগিয়েছে। কেউ শিক্ষক হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন, কেউ ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা দিচ্ছেন, কেউ আবার বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ব্যস্ত সময়সূচি, দায়িত্বের চাপ, প্রতিযোগিতামূলক জীবন—সব মিলিয়েও এই দিনের জন্য তারা সময় বের করে নিয়েছেন। কারণ, এই একসাথে কাটানো সময় তাদের কাছে শুধুই আনন্দ নয়, বরং একধরনের মানসিক শক্তি।
    মনোহরদীর চারপাশে ভ্রমণ
    আড্ডার ফাঁকে সিদ্ধান্ত হলো, আশপাশের কিছু জায়গা ঘুরে দেখা হবে। মোটরসাইকেল নিয়ে তারা ছুটলেন মনোহরদীর আশপাশে—হাতিরদিয়া, ছোট সুকুন্ধীসহ গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা স্থানগুলোতে। আগে তারা ঘুরেছিলেন কাপাসিয়ার খিরাটির জনপ্রিয় আড্ডাস্থল ‘ক্যাফে শীতল হাওয়া’তে, যার পাশেই ‘গোল্ডেন ক্যাফে’। শহরের কোলাহল পেরিয়ে এই জায়গাগুলো যেন নিঃশব্দ প্রকৃতির কাছে ফেরার সুযোগ করে দেয়।
    বৃষ্টির সঙ্গী হয়ে স্মৃতিচারণ
    কলেজে ফেরার কিছুক্ষণ পরই শুরু হলো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। ছাদে, গাছের পাতায়, মাঠের ঘাসে—প্রকৃতি যেন সুর তুলল। সেই বৃষ্টির শব্দে মেতে উঠল স্মৃতিচারণের আরেক পর্ব। হোস্টেল জীবনের হাসি-কান্না, পরীক্ষার আগে টেনশন, পড়াশোনার গুরুত্ব—সব বিষয় নিয়েই আলোচনা চলল। কেউ বললেন, “আগে যদি বুঝতাম পড়ার বিকল্প নেই, হয়তো আরও বেশি মনোযোগী হতাম।”
    এক বিকেলের শিক্ষণ
    এই মিলনমেলা কেবল আনন্দের ছিল না, বরং জীবনের এক মূল্যবান শিক্ষা দিয়ে গেল—বন্ধুত্ব শুধু বিনোদনের জন্য নয়, বরং একে অপরকে অনুপ্রাণিত করার জন্যও প্রয়োজন। বর্তমানের সাফল্য, ভবিষ্যতের স্বপ্ন, আর অতীতের স্মৃতি—সব একসাথে মিশে গেল মনোহরদীর সেই বিকেলে।
    সূর্য যখন পশ্চিম আকাশে লুকিয়ে যাচ্ছিল, মেঘের ফাঁকে ঝিলমিল করছিল সোনালি আলো, তখন ছয় বন্ধু দাঁড়িয়েছিলেন কলেজের সিঁড়িতে। হাতে ক্যামেরা, চোখে আনন্দের ঝিলিক। ছবিগুলো তারা বাঁচিয়ে রাখবেন বহু বছর—যেখানে থাকবে তাদের হাসি, আড্ডা, আর সেই অটুট বন্ধুত্বের সাক্ষ্য।
    সময় বয়ে যাবে, জীবন আরও বদলাবে, কিন্তু মনোহরদীর সেই বৃষ্টিভেজা বিকেল তাদের জীবনে থেকে যাবে চিরকাল—যেন এক পৃষ্ঠা, যা বন্ধ হলেও বারবার পড়তে ইচ্ছে করবে।

    তৌফিক সুলতান,প্রভাষক - ব্রেভ জুবিলেন্ট স্কলার্স অফ মনোহরদী মডেল কলেজ,(বি জে এস এম মডেল কলেজ)মনোহরদী, নরসিংদী।
    towfiqsultan.help@gmail.com
    01301483833
    পুরনো বন্ধুত্বের নস্টালজিয়া মিলনমেলা এক বিকেলে ফিরে দেখা এক দশকের স্মৃতি সময় কখনও থামে না, কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন থাকে যা বছরের পর বছর পরও ঠিক ততটাই উজ্জ্বল, যতটা ছিল শুরুতে। স্কুলজীবনের বন্ধুত্ব সেই রকমই এক অনুভূতি, যা বয়স, পেশা, কিংবা দূরত্বে ক্ষয় হয় না। এই সত্যেরই সাক্ষী হয়ে রইল মনোহরদীর এক বৃষ্টিভেজা বিকেল, যখন ২০১৫ ব্যাচের ছয়জন পুরনো বন্ধু—আশিক, তামিম, রাকিব, সোহান, তানভীর ও লেখক—দীর্ঘদিন পর আবার একত্র হলেন। অপ্রত্যাশিত ডাক, ব্যস্ত দিনের বিরতি সেদিন সকালটা ছিল একেবারেই সাধারণ। লেখক ব্যস্ত ছিলেন নিত্যদিনের কাজকর্মে। হঠাৎ ফোন বেজে ওঠে—ওপাশে বন্ধু তানভীর। খবর দিল, তারা মনোহরদী আসছে। তানভীর কেবল একজন বন্ধু নন, বরং জীবনের অন্যতম কাছের সঙ্গী। খবর শুনেই লেখকের মধ্যে কাজ ফেলে দেওয়ার এক অদম্য তাগিদ তৈরি হলো। দীর্ঘদিন পর প্রিয় মুখগুলো দেখার আনন্দ কোনো কিছুতেই ম্লান হতে পারে না। পথ আলাদা হলেও বন্ধুত্বের সেতু অটুট ২০১৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার পর থেকেই ছয় বন্ধুর জীবন ভিন্ন ভিন্ন পথে এগিয়েছে। আশিক, তামিম, সোহান ও তানভীর ভর্তি হয়েছিলেন নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজে। রাকিব ভর্তি হয় একটি প্রাইভেট কলেজে, আর লেখক ভর্তি হন মনোহরদীর এম এ মজিদ সায়েন্স কলেজে। কলেজজীবনে দেখা-সাক্ষাৎ কমে এলেও যোগাযোগ বজায় ছিল, আর হৃদয়ের কোথাও গেঁথে ছিল সেই পুরনো দিনের গল্পগাথা। স্মৃতির প্রাঙ্গণে ফেরা মিলনমেলার স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয় এম এ মজিদ সায়েন্স কলেজের প্রাঙ্গণ—যেখানে লেখকের নিজের কলেজজীবনের অনেক স্মৃতি জমা আছে। লাল-সাদা ভবন, খোলা মাঠ, আর গাছের সারি যেন গল্প বলতে থাকে সেই তারুণ্যের দিনগুলোর। এখানেই তারা দাঁড়িয়ে তুললেন কয়েকটি ছবি, যা পরবর্তীতে এই দিনের সাক্ষ্য হয়ে থাকবে। আড্ডা, গল্প আর স্কুল-কলেজের দিনগুলি একটু পরেই শুরু হলো গল্পের স্রোত। স্কুল জীবনের দুষ্টুমি, প্রথম বেঞ্চের অভিজ্ঞতা, ‘ভূগোল ক্লাসে’ পাস মার্ক নিয়ে হাসাহাসি, ক্যানটিনের চা-সমোসার স্মৃতি—সব উঠে এল হাসি আর আবেগের মিশ্রণে। কলেজ জীবনের কথা বলতে গিয়ে কেউ স্মরণ করলেন হোস্টেলের রাত জাগা, কেউ আবার ‘পড়ার চেয়ে আড্ডা বেশি’ দিনগুলোর গল্প শোনালেন। আলোচনা চলল শিক্ষকদের স্মৃতি, বন্ধুদের হারিয়ে যাওয়া চিঠি, এমনকি পুরনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কথা নিয়েও। বর্তমানের পরিচয়, ভবিষ্যতের স্বপ্ন আজ সবাই জীবনের পথে অনেকদূর এগিয়েছে। কেউ শিক্ষক হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন, কেউ ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা দিচ্ছেন, কেউ আবার বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ব্যস্ত সময়সূচি, দায়িত্বের চাপ, প্রতিযোগিতামূলক জীবন—সব মিলিয়েও এই দিনের জন্য তারা সময় বের করে নিয়েছেন। কারণ, এই একসাথে কাটানো সময় তাদের কাছে শুধুই আনন্দ নয়, বরং একধরনের মানসিক শক্তি। মনোহরদীর চারপাশে ভ্রমণ আড্ডার ফাঁকে সিদ্ধান্ত হলো, আশপাশের কিছু জায়গা ঘুরে দেখা হবে। মোটরসাইকেল নিয়ে তারা ছুটলেন মনোহরদীর আশপাশে—হাতিরদিয়া, ছোট সুকুন্ধীসহ গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা স্থানগুলোতে। আগে তারা ঘুরেছিলেন কাপাসিয়ার খিরাটির জনপ্রিয় আড্ডাস্থল ‘ক্যাফে শীতল হাওয়া’তে, যার পাশেই ‘গোল্ডেন ক্যাফে’। শহরের কোলাহল পেরিয়ে এই জায়গাগুলো যেন নিঃশব্দ প্রকৃতির কাছে ফেরার সুযোগ করে দেয়। বৃষ্টির সঙ্গী হয়ে স্মৃতিচারণ কলেজে ফেরার কিছুক্ষণ পরই শুরু হলো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। ছাদে, গাছের পাতায়, মাঠের ঘাসে—প্রকৃতি যেন সুর তুলল। সেই বৃষ্টির শব্দে মেতে উঠল স্মৃতিচারণের আরেক পর্ব। হোস্টেল জীবনের হাসি-কান্না, পরীক্ষার আগে টেনশন, পড়াশোনার গুরুত্ব—সব বিষয় নিয়েই আলোচনা চলল। কেউ বললেন, “আগে যদি বুঝতাম পড়ার বিকল্প নেই, হয়তো আরও বেশি মনোযোগী হতাম।” এক বিকেলের শিক্ষণ এই মিলনমেলা কেবল আনন্দের ছিল না, বরং জীবনের এক মূল্যবান শিক্ষা দিয়ে গেল—বন্ধুত্ব শুধু বিনোদনের জন্য নয়, বরং একে অপরকে অনুপ্রাণিত করার জন্যও প্রয়োজন। বর্তমানের সাফল্য, ভবিষ্যতের স্বপ্ন, আর অতীতের স্মৃতি—সব একসাথে মিশে গেল মনোহরদীর সেই বিকেলে। সূর্য যখন পশ্চিম আকাশে লুকিয়ে যাচ্ছিল, মেঘের ফাঁকে ঝিলমিল করছিল সোনালি আলো, তখন ছয় বন্ধু দাঁড়িয়েছিলেন কলেজের সিঁড়িতে। হাতে ক্যামেরা, চোখে আনন্দের ঝিলিক। ছবিগুলো তারা বাঁচিয়ে রাখবেন বহু বছর—যেখানে থাকবে তাদের হাসি, আড্ডা, আর সেই অটুট বন্ধুত্বের সাক্ষ্য। সময় বয়ে যাবে, জীবন আরও বদলাবে, কিন্তু মনোহরদীর সেই বৃষ্টিভেজা বিকেল তাদের জীবনে থেকে যাবে চিরকাল—যেন এক পৃষ্ঠা, যা বন্ধ হলেও বারবার পড়তে ইচ্ছে করবে। তৌফিক সুলতান,প্রভাষক - ব্রেভ জুবিলেন্ট স্কলার্স অফ মনোহরদী মডেল কলেজ,(বি জে এস এম মডেল কলেজ)মনোহরদী, নরসিংদী। towfiqsultan.help@gmail.com 01301483833
    Love
    2
    0 Σχόλια 2 Μοιράστηκε 2χλμ. Views 1 Προεπισκόπηση
  • https://eyenewsbd.com/v/1b5L5Y
    https://eyenewsbd.com/v/1b5L5Y
    EYENEWSBD.COM
    সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান...................
    সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান রাতের বেলায় কোর কমিটির মিটিং শেষে সাংবাদিকদেরকে ব্রিফ করেন। প্রশ্নে তার জবাব।
    0 Σχόλια 0 Μοιράστηκε 177 Views 0 Προεπισκόπηση
  • স্বপ্ন যেখানে সার্থক মনোহরদীর বুকে আলোকবর্তিকা হয়ে উঠছে ব্রেভ জুবিল্যান্ট স্কলার্স অফ মনোহরদী মডেল কলেজ
    স্বপ্ন যেখানে সার্থক মনোহরদীর বুকে আলোকবর্তিকা হয়ে উঠছে ব্রেভ জুবিল্যান্ট স্কলার্স অফ মনোহরদী মডেল কলেজ শিক্ষা শুধু তথ্য ও পরিসংখ্যানের জগৎ নয়; শিক্ষা হলো আলোর সেই প্রজ্বলন, যা একটি জাতিকে এগিয়ে নেয় মানবিকতা, দক্ষতা ও নৈতিকতার পথে। এমন এক আলোকপ্রদীপ হয়ে উঠেছেন মঞ্জিল মোল্লা—যিনি বর্তমান সময়ের অন্যতম প্রগতিশীল, বহুমাত্রিক এবং মানবিক শিক্ষাবিদ। তিনি শুধু একজন অধ্যক্ষই নন, তিনি একজন...
    0 Σχόλια 0 Μοιράστηκε 2χλμ. Views 1 Προεπισκόπηση
  • 0 Σχόλια 0 Μοιράστηκε 158 Views 0 Προεπισκόπηση
  • আলোকিত মানুষ গড়ার এক নীরব বিপ্লব
    নিঃশব্দ গ্রামীণ প্রান্তরের বুকে গোপনে এগিয়ে চলেছে এক অসাধারণ বিপ্লব—মানুষ গড়ার বিপ্লব। গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার চর খিরাটির মতো তুলনামূলক পশ্চাদপদ একটি গ্রামে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে গড়ে ওঠা পাঠাগারটি যেন সেই বিপ্লবের নীরব সূতিকাগার। কলেজে যাওয়ার পথে হঠাৎ চোখে পড়া একটি ছোট্ট বোর্ড—"বসুন্ধরা শুভসংঘের পাঠাগার"—আমার ভাবনার জগতে আলোড়ন তোলে। কৌতূহল আমাকে টেনে নেয় পাঠাগারের সামনে, আর সেখানেই শুরু হয় নতুন এক আত্মিক যাত্রা।
    পাঠাগারে প্রবেশ করেই চোখে পড়ে যে আন্তরিক পরিবেশ ও মানুষগুলোর উষ্ণতা, তা যেন গ্রামের সাধারণত নির্জন জীবনে এক অপার্থিব স্পর্শ এনে দেয়। বিশেষ করে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জনাব জাকারিয়া জামান ভাইয়ের উপস্থিতি এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি আমার হৃদয়কে গভীরভাবে নাড়া দেয়। তিনি কেবল পেশাদার নন—তিনি একজন আদর্শ সামাজিক রূপান্তরকামী মানুষ, যিনি পাঠাগারকে শুধুই বইয়ের কেন্দ্র নয়, বরং নেতৃত্ব, চিন্তা ও মূল্যবোধের এক বিকাশকেন্দ্র হিসেবে ভাবেন।
    এই পাঠাগার কেবল একটি পাঠ স্থান নয়, এটি যেন এক মানবিক প্ল্যাটফর্ম—যেখানে শিশু-কিশোরদের জন্য গল্পের বই, শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্য ও সহপাঠ্য বই এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ইতিহাস, সাহিত্য, ধর্ম ও আত্মোন্নয়নমূলক বইয়ের বিস্তৃত সংগ্রহ রয়েছে। সবচেয়ে অনন্য বিষয় হলো—এই পাঠাগারে বই পড়ার জন্য টাকার প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন কেবল আগ্রহ আর মননশীল সময়।
    পাঠাগারের নিয়মিত আয়োজনগুলো যেমন—পাঠচক্র, আবৃত্তি কর্মশালা, বক্তৃতা প্রশিক্ষণ, প্রবন্ধ পাঠ—এসব আয়োজন শিশুদের জ্ঞানের পাশাপাশি নৈতিকতা, শুদ্ধ ভাষাচর্চা ও নেতৃত্বগুণ বিকাশে এক অসাধারণ ভূমিকা রাখছে। গ্রামীণ সমাজে যেখানে একটি ভালো শিক্ষকের অভাবেই অনেক সম্ভাবনা ঝরে যায়, সেখানে এই পাঠাগার যেন সেই সম্ভাবনাগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠছে।
    আমি যখন নিবন্ধন ফরম পূরণ করছিলাম, মনে হচ্ছিল আমি যেন এক নতুন আত্মিক জন্ম নিচ্ছি—আবার ফিরে আসছি বইয়ের জগতে, জ্ঞানের রাজ্যে। আমি কেবল পাঠক হিসেবে নয়, একজন সংগঠক ও শুভসংঘের একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবেও এই মানবিক বিপ্লবে যুক্ত থাকার সংকল্প করেছি। একজন শিক্ষক হিসেবে আমার দায়িত্ব শুধু শ্রেণিকক্ষে সীমাবদ্ধ নয়—সমাজ গড়ার প্রতিটি প্রয়াসে যুক্ত হওয়াই আমার সত্যিকারের পরিচয়।
    আমার স্বপ্ন, এই পাঠাগারকে কেন্দ্র করে একদিন গড়ে উঠবে একটি শক্তিশালী গ্রামীণ পাঠচর্চা আন্দোলন—যার মাধ্যমে কাপাসিয়া হবে এক আলোকিত বাংলাদেশ গড়ার মডেল। স্কুলপড়ুয়া শিশু থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণী ও প্রবীণ ব্যক্তিরাও এখানে খুঁজে পাবেন জ্ঞান, স্মৃতি, ও অনুপ্রেরণার আশ্রয়। গবেষণা, সাহিত্য সন্ধ্যা, স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল লার্নিং—এই পাঠাগার একে একে সেই সব দিগন্ত উন্মোচন করছে।
    এই নিঃশব্দ বিপ্লবটি প্রমাণ করে—একটি বই, একটি পাঠাগার, এবং একজন দায়বদ্ধ মানুষ বদলে দিতে পারে একটি অঞ্চল, একটি সমাজ, এমনকি একটি জাতির ভবিষ্যৎ। চর খিরাটির এই পাঠাগার তাই শুধু একটি স্থাপনা নয়; এটি হচ্ছে নেতৃত্ব, মানবিকতা ও মূল্যবোধ গঠনের এক আলোকিত সূতিকাগার।
    মালালা ইউসুফজাই যেমন বলেছেন,
    “একটি বই, একটি শিশু, একজন শিক্ষক এবং একটি কলম—এই চারটি জিনিসই বদলে দিতে পারে পুরো পৃথিবী।”
    এই বিশ্বাসকে বাস্তবে রূপ দিচ্ছে বসুন্ধরা শুভসংঘের এই পাঠাগার। আমি বিশ্বাস করি—এই পাঠাগার একদিন হয়ে উঠবে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামীণ পাঠানুরাগীর আত্মিক ঠিকানা।


    তৌফিক সুলতান-প্রভাষক, ব্রেভ জুবিল্যান্ট স্কলার্স অফ মনোহরদী মডেল কলেজ (বি জে এস এম মডেল কলেজ), মনোহরদী, নরসিংদী।
    সদস্য, বসুন্ধরা শুভসংঘ (চর খিরাটি পাঠাগার)
    towfiqsultan.help@gmail.com
    01301483833
    আলোকিত মানুষ গড়ার এক নীরব বিপ্লব নিঃশব্দ গ্রামীণ প্রান্তরের বুকে গোপনে এগিয়ে চলেছে এক অসাধারণ বিপ্লব—মানুষ গড়ার বিপ্লব। গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার চর খিরাটির মতো তুলনামূলক পশ্চাদপদ একটি গ্রামে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে গড়ে ওঠা পাঠাগারটি যেন সেই বিপ্লবের নীরব সূতিকাগার। কলেজে যাওয়ার পথে হঠাৎ চোখে পড়া একটি ছোট্ট বোর্ড—"বসুন্ধরা শুভসংঘের পাঠাগার"—আমার ভাবনার জগতে আলোড়ন তোলে। কৌতূহল আমাকে টেনে নেয় পাঠাগারের সামনে, আর সেখানেই শুরু হয় নতুন এক আত্মিক যাত্রা। পাঠাগারে প্রবেশ করেই চোখে পড়ে যে আন্তরিক পরিবেশ ও মানুষগুলোর উষ্ণতা, তা যেন গ্রামের সাধারণত নির্জন জীবনে এক অপার্থিব স্পর্শ এনে দেয়। বিশেষ করে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জনাব জাকারিয়া জামান ভাইয়ের উপস্থিতি এবং মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি আমার হৃদয়কে গভীরভাবে নাড়া দেয়। তিনি কেবল পেশাদার নন—তিনি একজন আদর্শ সামাজিক রূপান্তরকামী মানুষ, যিনি পাঠাগারকে শুধুই বইয়ের কেন্দ্র নয়, বরং নেতৃত্ব, চিন্তা ও মূল্যবোধের এক বিকাশকেন্দ্র হিসেবে ভাবেন। এই পাঠাগার কেবল একটি পাঠ স্থান নয়, এটি যেন এক মানবিক প্ল্যাটফর্ম—যেখানে শিশু-কিশোরদের জন্য গল্পের বই, শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্য ও সহপাঠ্য বই এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ইতিহাস, সাহিত্য, ধর্ম ও আত্মোন্নয়নমূলক বইয়ের বিস্তৃত সংগ্রহ রয়েছে। সবচেয়ে অনন্য বিষয় হলো—এই পাঠাগারে বই পড়ার জন্য টাকার প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন কেবল আগ্রহ আর মননশীল সময়। পাঠাগারের নিয়মিত আয়োজনগুলো যেমন—পাঠচক্র, আবৃত্তি কর্মশালা, বক্তৃতা প্রশিক্ষণ, প্রবন্ধ পাঠ—এসব আয়োজন শিশুদের জ্ঞানের পাশাপাশি নৈতিকতা, শুদ্ধ ভাষাচর্চা ও নেতৃত্বগুণ বিকাশে এক অসাধারণ ভূমিকা রাখছে। গ্রামীণ সমাজে যেখানে একটি ভালো শিক্ষকের অভাবেই অনেক সম্ভাবনা ঝরে যায়, সেখানে এই পাঠাগার যেন সেই সম্ভাবনাগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করার প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠছে। আমি যখন নিবন্ধন ফরম পূরণ করছিলাম, মনে হচ্ছিল আমি যেন এক নতুন আত্মিক জন্ম নিচ্ছি—আবার ফিরে আসছি বইয়ের জগতে, জ্ঞানের রাজ্যে। আমি কেবল পাঠক হিসেবে নয়, একজন সংগঠক ও শুভসংঘের একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবেও এই মানবিক বিপ্লবে যুক্ত থাকার সংকল্প করেছি। একজন শিক্ষক হিসেবে আমার দায়িত্ব শুধু শ্রেণিকক্ষে সীমাবদ্ধ নয়—সমাজ গড়ার প্রতিটি প্রয়াসে যুক্ত হওয়াই আমার সত্যিকারের পরিচয়। আমার স্বপ্ন, এই পাঠাগারকে কেন্দ্র করে একদিন গড়ে উঠবে একটি শক্তিশালী গ্রামীণ পাঠচর্চা আন্দোলন—যার মাধ্যমে কাপাসিয়া হবে এক আলোকিত বাংলাদেশ গড়ার মডেল। স্কুলপড়ুয়া শিশু থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণী ও প্রবীণ ব্যক্তিরাও এখানে খুঁজে পাবেন জ্ঞান, স্মৃতি, ও অনুপ্রেরণার আশ্রয়। গবেষণা, সাহিত্য সন্ধ্যা, স্বেচ্ছাসেবী প্রশিক্ষণ থেকে শুরু করে প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল লার্নিং—এই পাঠাগার একে একে সেই সব দিগন্ত উন্মোচন করছে। এই নিঃশব্দ বিপ্লবটি প্রমাণ করে—একটি বই, একটি পাঠাগার, এবং একজন দায়বদ্ধ মানুষ বদলে দিতে পারে একটি অঞ্চল, একটি সমাজ, এমনকি একটি জাতির ভবিষ্যৎ। চর খিরাটির এই পাঠাগার তাই শুধু একটি স্থাপনা নয়; এটি হচ্ছে নেতৃত্ব, মানবিকতা ও মূল্যবোধ গঠনের এক আলোকিত সূতিকাগার। মালালা ইউসুফজাই যেমন বলেছেন, “একটি বই, একটি শিশু, একজন শিক্ষক এবং একটি কলম—এই চারটি জিনিসই বদলে দিতে পারে পুরো পৃথিবী।” এই বিশ্বাসকে বাস্তবে রূপ দিচ্ছে বসুন্ধরা শুভসংঘের এই পাঠাগার। আমি বিশ্বাস করি—এই পাঠাগার একদিন হয়ে উঠবে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামীণ পাঠানুরাগীর আত্মিক ঠিকানা। তৌফিক সুলতান-প্রভাষক, ব্রেভ জুবিল্যান্ট স্কলার্স অফ মনোহরদী মডেল কলেজ (বি জে এস এম মডেল কলেজ), মনোহরদী, নরসিংদী। সদস্য, বসুন্ধরা শুভসংঘ (চর খিরাটি পাঠাগার) towfiqsultan.help@gmail.com 01301483833
    Like
    2
    0 Σχόλια 0 Μοιράστηκε 848 Views 0 Προεπισκόπηση
  • Like
    1
    0 Σχόλια 1 Μοιράστηκε 539 Views 1 Προεπισκόπηση
  • Love
    1
    1 Σχόλια 0 Μοιράστηκε 273 Views 1 Προεπισκόπηση
  • পুরনো বন্ধুত্বের নস্টালজিয়া মিলনমেলা এক বিকেলে ফিরে দেখা এক দশকের স্মৃতি
    সময় কখনও থামে না, কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন থাকে যা বছরের পর বছর পরও ঠিক ততটাই উজ্জ্বল, যতটা ছিল শুরুতে। স্কুলজীবনের বন্ধুত্ব সেই রকমই এক অনুভূতি, যা বয়স, পেশা, কিংবা দূরত্বে ক্ষয় হয় না। এই সত্যেরই সাক্ষী হয়ে রইল মনোহরদীর এক বৃষ্টিভেজা বিকেল, যখন ২০১৫ ব্যাচের ছয়জন পুরনো বন্ধু—আশিক, তামিম, রাকিব, সোহান, তানভীর ও লেখক—দীর্ঘদিন পর আবার একত্র হলেন।
    লেখক লিখেন জীবনের ব্যস্ততা যতই বাড়ুক না কেন, পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা করার সময় বের করা উচিত। কারণ এমন মুহূর্তগুলোই আমাদের জীবনে নতুন উদ্যম, আনন্দ আর অনুপ্রেরণা এনে দেয়।
    তানভীরের সঙ্গে ছিল আশিক, তামিম, রাকিব ও সোহান—সবাই আমার স্কুলের সহপাঠী। মনে পড়ে গেল সেই সময়ের কথা—এসএসসি পরীক্ষার পর ভর্তি মৌসুমে আমরা আলাদা পথে পা বাড়িয়েছিলাম। আশিক, তামিম, সোহান ও তানভীর ভর্তি হয়েছিল আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজে, রাকিব চলে গিয়েছিল একটি প্রাইভেট কলেজে, আর আমি ভর্তি হয়েছিলাম এম এ মজিদ সায়েন্স কলেজে।
    আজকের ছবিগুলো তোলা হয়েছে এম এ মজিদ সায়েন্স কলেজের সামনেই। সেখানে দাঁড়িয়ে আমরা স্মৃতির সোনালি পাতাগুলো উল্টে দেখছিলাম—স্কুল জীবনের খেলাধুলা, পরীক্ষার আগে হুড়োহুড়ি করে পড়া, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কলেজ জীবনের আড্ডা আর নানা গল্পে ভরা দিনগুলো।

    দীর্ঘ সময় আমরা কেবল স্মৃতি রোমন্থন করিনি, বরং একে অপরের বর্তমান জীবন নিয়েও কথা বলেছি। যাদের সাথে আজ দেখা হলো, তারা এখন জীবনের ভিন্ন ভিন্ন পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত—কেউ শিক্ষক, কেউ ডাক্তার, কেউ আবার বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
    অপ্রত্যাশিত ডাক, ব্যস্ত দিনের বিরতি
    সেদিন সকালটা ছিল একেবারেই সাধারণ। লেখক ব্যস্ত ছিলেন নিত্যদিনের কাজকর্মে। হঠাৎ ফোন বেজে ওঠে—ওপাশে বন্ধু তানভীর। খবর দিল, তারা মনোহরদী আসছে। তানভীর কেবল একজন বন্ধু নন, বরং জীবনের অন্যতম কাছের সঙ্গী। খবর শুনেই লেখকের মধ্যে কাজ ফেলে দেওয়ার এক অদম্য তাগিদ তৈরি হলো। দীর্ঘদিন পর প্রিয় মুখগুলো দেখার আনন্দ কোনো কিছুতেই ম্লান হতে পারে না।
    পথ আলাদা হলেও বন্ধুত্বের সেতু অটুট
    ২০১৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার পর থেকেই ছয় বন্ধুর জীবন ভিন্ন ভিন্ন পথে এগিয়েছে। আশিক, তামিম, সোহান ও তানভীর ভর্তি হয়েছিলেন নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজে। রাকিব ভর্তি হয় একটি প্রাইভেট কলেজে, আর লেখক ভর্তি হন মনোহরদীর এম এ মজিদ সায়েন্স কলেজে। কলেজজীবনে দেখা-সাক্ষাৎ কমে এলেও যোগাযোগ বজায় ছিল, আর হৃদয়ের কোথাও গেঁথে ছিল সেই পুরনো দিনের গল্পগাথা।
    স্মৃতির প্রাঙ্গণে ফেরা
    মিলনমেলার স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয় এম এ মজিদ সায়েন্স কলেজের প্রাঙ্গণ—যেখানে লেখকের নিজের কলেজজীবনের অনেক স্মৃতি জমা আছে। লাল-সাদা ভবন, খোলা মাঠ, আর গাছের সারি যেন গল্প বলতে থাকে সেই তারুণ্যের দিনগুলোর। এখানেই তারা দাঁড়িয়ে তুললেন কয়েকটি ছবি, যা পরবর্তীতে এই দিনের সাক্ষ্য হয়ে থাকবে।
    আড্ডা, গল্প আর স্কুল-কলেজের দিনগুলি
    একটু পরেই শুরু হলো গল্পের স্রোত। স্কুল জীবনের দুষ্টুমি, প্রথম বেঞ্চের অভিজ্ঞতা, ‘ভূগোল ক্লাসে’ পাস মার্ক নিয়ে হাসাহাসি, ক্যানটিনের চা-সমোসার স্মৃতি—সব উঠে এল হাসি আর আবেগের মিশ্রণে। কলেজ জীবনের কথা বলতে গিয়ে কেউ স্মরণ করলেন হোস্টেলের রাত জাগা, কেউ আবার ‘পড়ার চেয়ে আড্ডা বেশি’ দিনগুলোর গল্প শোনালেন। আলোচনা চলল শিক্ষকদের স্মৃতি, বন্ধুদের হারিয়ে যাওয়া চিঠি, এমনকি পুরনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কথা নিয়েও।
    বর্তমানের পরিচয়, ভবিষ্যতের স্বপ্ন
    আজ সবাই জীবনের পথে অনেকদূর এগিয়েছে। কেউ শিক্ষক হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন, কেউ ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা দিচ্ছেন, কেউ আবার বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ব্যস্ত সময়সূচি, দায়িত্বের চাপ, প্রতিযোগিতামূলক জীবন—সব মিলিয়েও এই দিনের জন্য তারা সময় বের করে নিয়েছেন। কারণ, এই একসাথে কাটানো সময় তাদের কাছে শুধুই আনন্দ নয়, বরং একধরনের মানসিক শক্তি।
    মনোহরদীর চারপাশে ভ্রমণ
    আড্ডার ফাঁকে সিদ্ধান্ত হলো, আশপাশের কিছু জায়গা ঘুরে দেখা হবে। মোটরসাইকেল নিয়ে তারা ছুটলেন মনোহরদীর আশপাশে—হাতিরদিয়া, ছোট সুকুন্ধীসহ গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা স্থানগুলোতে। আগে তারা ঘুরেছিলেন কাপাসিয়ার খিরাটির জনপ্রিয় আড্ডাস্থল ‘ক্যাফে শীতল হাওয়া’তে, যার পাশেই ‘গোল্ডেন ক্যাফে’। শহরের কোলাহল পেরিয়ে এই জায়গাগুলো যেন নিঃশব্দ প্রকৃতির কাছে ফেরার সুযোগ করে দেয়।
    বৃষ্টির সঙ্গী হয়ে স্মৃতিচারণ
    কলেজে ফেরার কিছুক্ষণ পরই শুরু হলো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। ছাদে, গাছের পাতায়, মাঠের ঘাসে—প্রকৃতি যেন সুর তুলল। সেই বৃষ্টির শব্দে মেতে উঠল স্মৃতিচারণের আরেক পর্ব। হোস্টেল জীবনের হাসি-কান্না, পরীক্ষার আগে টেনশন, পড়াশোনার গুরুত্ব—সব বিষয় নিয়েই আলোচনা চলল। কেউ বললেন, “আগে যদি বুঝতাম পড়ার বিকল্প নেই, হয়তো আরও বেশি মনোযোগী হতাম।”
    এক বিকেলের শিক্ষণ
    এই মিলনমেলা কেবল আনন্দের ছিল না, বরং জীবনের এক মূল্যবান শিক্ষা দিয়ে গেল—বন্ধুত্ব শুধু বিনোদনের জন্য নয়, বরং একে অপরকে অনুপ্রাণিত করার জন্যও প্রয়োজন। বর্তমানের সাফল্য, ভবিষ্যতের স্বপ্ন, আর অতীতের স্মৃতি—সব একসাথে মিশে গেল মনোহরদীর সেই বিকেলে।
    সূর্য যখন পশ্চিম আকাশে লুকিয়ে যাচ্ছিল, মেঘের ফাঁকে ঝিলমিল করছিল সোনালি আলো, তখন ছয় বন্ধু দাঁড়িয়েছিলেন কলেজের সিঁড়িতে। হাতে ক্যামেরা, চোখে আনন্দের ঝিলিক। ছবিগুলো তারা বাঁচিয়ে রাখবেন বহু বছর—যেখানে থাকবে তাদের হাসি, আড্ডা, আর সেই অটুট বন্ধুত্বের সাক্ষ্য।
    সময় বয়ে যাবে, জীবন আরও বদলাবে, কিন্তু মনোহরদীর সেই বৃষ্টিভেজা বিকেল তাদের জীবনে থেকে যাবে চিরকাল—যেন এক পৃষ্ঠা, যা বন্ধ হলেও বারবার পড়তে ইচ্ছে করবে।

    তৌফিক সুলতান,প্রভাষক - ব্রেভ জুবিলেন্ট স্কলার্স অফ মনোহরদী মডেল কলেজ,(বি জে এস এম মডেল কলেজ)মনোহরদী, নরসিংদী।
    towfiqsultan.help@gmail.com
    01301483833
    পুরনো বন্ধুত্বের নস্টালজিয়া মিলনমেলা এক বিকেলে ফিরে দেখা এক দশকের স্মৃতি সময় কখনও থামে না, কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন থাকে যা বছরের পর বছর পরও ঠিক ততটাই উজ্জ্বল, যতটা ছিল শুরুতে। স্কুলজীবনের বন্ধুত্ব সেই রকমই এক অনুভূতি, যা বয়স, পেশা, কিংবা দূরত্বে ক্ষয় হয় না। এই সত্যেরই সাক্ষী হয়ে রইল মনোহরদীর এক বৃষ্টিভেজা বিকেল, যখন ২০১৫ ব্যাচের ছয়জন পুরনো বন্ধু—আশিক, তামিম, রাকিব, সোহান, তানভীর ও লেখক—দীর্ঘদিন পর আবার একত্র হলেন। লেখক লিখেন জীবনের ব্যস্ততা যতই বাড়ুক না কেন, পুরনো বন্ধুদের সাথে দেখা করার সময় বের করা উচিত। কারণ এমন মুহূর্তগুলোই আমাদের জীবনে নতুন উদ্যম, আনন্দ আর অনুপ্রেরণা এনে দেয়। তানভীরের সঙ্গে ছিল আশিক, তামিম, রাকিব ও সোহান—সবাই আমার স্কুলের সহপাঠী। মনে পড়ে গেল সেই সময়ের কথা—এসএসসি পরীক্ষার পর ভর্তি মৌসুমে আমরা আলাদা পথে পা বাড়িয়েছিলাম। আশিক, তামিম, সোহান ও তানভীর ভর্তি হয়েছিল আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজে, রাকিব চলে গিয়েছিল একটি প্রাইভেট কলেজে, আর আমি ভর্তি হয়েছিলাম এম এ মজিদ সায়েন্স কলেজে। আজকের ছবিগুলো তোলা হয়েছে এম এ মজিদ সায়েন্স কলেজের সামনেই। সেখানে দাঁড়িয়ে আমরা স্মৃতির সোনালি পাতাগুলো উল্টে দেখছিলাম—স্কুল জীবনের খেলাধুলা, পরীক্ষার আগে হুড়োহুড়ি করে পড়া, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কলেজ জীবনের আড্ডা আর নানা গল্পে ভরা দিনগুলো। দীর্ঘ সময় আমরা কেবল স্মৃতি রোমন্থন করিনি, বরং একে অপরের বর্তমান জীবন নিয়েও কথা বলেছি। যাদের সাথে আজ দেখা হলো, তারা এখন জীবনের ভিন্ন ভিন্ন পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত—কেউ শিক্ষক, কেউ ডাক্তার, কেউ আবার বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। অপ্রত্যাশিত ডাক, ব্যস্ত দিনের বিরতি সেদিন সকালটা ছিল একেবারেই সাধারণ। লেখক ব্যস্ত ছিলেন নিত্যদিনের কাজকর্মে। হঠাৎ ফোন বেজে ওঠে—ওপাশে বন্ধু তানভীর। খবর দিল, তারা মনোহরদী আসছে। তানভীর কেবল একজন বন্ধু নন, বরং জীবনের অন্যতম কাছের সঙ্গী। খবর শুনেই লেখকের মধ্যে কাজ ফেলে দেওয়ার এক অদম্য তাগিদ তৈরি হলো। দীর্ঘদিন পর প্রিয় মুখগুলো দেখার আনন্দ কোনো কিছুতেই ম্লান হতে পারে না। পথ আলাদা হলেও বন্ধুত্বের সেতু অটুট ২০১৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার পর থেকেই ছয় বন্ধুর জীবন ভিন্ন ভিন্ন পথে এগিয়েছে। আশিক, তামিম, সোহান ও তানভীর ভর্তি হয়েছিলেন নরসিংদীর আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজে। রাকিব ভর্তি হয় একটি প্রাইভেট কলেজে, আর লেখক ভর্তি হন মনোহরদীর এম এ মজিদ সায়েন্স কলেজে। কলেজজীবনে দেখা-সাক্ষাৎ কমে এলেও যোগাযোগ বজায় ছিল, আর হৃদয়ের কোথাও গেঁথে ছিল সেই পুরনো দিনের গল্পগাথা। স্মৃতির প্রাঙ্গণে ফেরা মিলনমেলার স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয় এম এ মজিদ সায়েন্স কলেজের প্রাঙ্গণ—যেখানে লেখকের নিজের কলেজজীবনের অনেক স্মৃতি জমা আছে। লাল-সাদা ভবন, খোলা মাঠ, আর গাছের সারি যেন গল্প বলতে থাকে সেই তারুণ্যের দিনগুলোর। এখানেই তারা দাঁড়িয়ে তুললেন কয়েকটি ছবি, যা পরবর্তীতে এই দিনের সাক্ষ্য হয়ে থাকবে। আড্ডা, গল্প আর স্কুল-কলেজের দিনগুলি একটু পরেই শুরু হলো গল্পের স্রোত। স্কুল জীবনের দুষ্টুমি, প্রথম বেঞ্চের অভিজ্ঞতা, ‘ভূগোল ক্লাসে’ পাস মার্ক নিয়ে হাসাহাসি, ক্যানটিনের চা-সমোসার স্মৃতি—সব উঠে এল হাসি আর আবেগের মিশ্রণে। কলেজ জীবনের কথা বলতে গিয়ে কেউ স্মরণ করলেন হোস্টেলের রাত জাগা, কেউ আবার ‘পড়ার চেয়ে আড্ডা বেশি’ দিনগুলোর গল্প শোনালেন। আলোচনা চলল শিক্ষকদের স্মৃতি, বন্ধুদের হারিয়ে যাওয়া চিঠি, এমনকি পুরনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কথা নিয়েও। বর্তমানের পরিচয়, ভবিষ্যতের স্বপ্ন আজ সবাই জীবনের পথে অনেকদূর এগিয়েছে। কেউ শিক্ষক হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন, কেউ ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা দিচ্ছেন, কেউ আবার বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ব্যস্ত সময়সূচি, দায়িত্বের চাপ, প্রতিযোগিতামূলক জীবন—সব মিলিয়েও এই দিনের জন্য তারা সময় বের করে নিয়েছেন। কারণ, এই একসাথে কাটানো সময় তাদের কাছে শুধুই আনন্দ নয়, বরং একধরনের মানসিক শক্তি। মনোহরদীর চারপাশে ভ্রমণ আড্ডার ফাঁকে সিদ্ধান্ত হলো, আশপাশের কিছু জায়গা ঘুরে দেখা হবে। মোটরসাইকেল নিয়ে তারা ছুটলেন মনোহরদীর আশপাশে—হাতিরদিয়া, ছোট সুকুন্ধীসহ গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা স্থানগুলোতে। আগে তারা ঘুরেছিলেন কাপাসিয়ার খিরাটির জনপ্রিয় আড্ডাস্থল ‘ক্যাফে শীতল হাওয়া’তে, যার পাশেই ‘গোল্ডেন ক্যাফে’। শহরের কোলাহল পেরিয়ে এই জায়গাগুলো যেন নিঃশব্দ প্রকৃতির কাছে ফেরার সুযোগ করে দেয়। বৃষ্টির সঙ্গী হয়ে স্মৃতিচারণ কলেজে ফেরার কিছুক্ষণ পরই শুরু হলো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। ছাদে, গাছের পাতায়, মাঠের ঘাসে—প্রকৃতি যেন সুর তুলল। সেই বৃষ্টির শব্দে মেতে উঠল স্মৃতিচারণের আরেক পর্ব। হোস্টেল জীবনের হাসি-কান্না, পরীক্ষার আগে টেনশন, পড়াশোনার গুরুত্ব—সব বিষয় নিয়েই আলোচনা চলল। কেউ বললেন, “আগে যদি বুঝতাম পড়ার বিকল্প নেই, হয়তো আরও বেশি মনোযোগী হতাম।” এক বিকেলের শিক্ষণ এই মিলনমেলা কেবল আনন্দের ছিল না, বরং জীবনের এক মূল্যবান শিক্ষা দিয়ে গেল—বন্ধুত্ব শুধু বিনোদনের জন্য নয়, বরং একে অপরকে অনুপ্রাণিত করার জন্যও প্রয়োজন। বর্তমানের সাফল্য, ভবিষ্যতের স্বপ্ন, আর অতীতের স্মৃতি—সব একসাথে মিশে গেল মনোহরদীর সেই বিকেলে। সূর্য যখন পশ্চিম আকাশে লুকিয়ে যাচ্ছিল, মেঘের ফাঁকে ঝিলমিল করছিল সোনালি আলো, তখন ছয় বন্ধু দাঁড়িয়েছিলেন কলেজের সিঁড়িতে। হাতে ক্যামেরা, চোখে আনন্দের ঝিলিক। ছবিগুলো তারা বাঁচিয়ে রাখবেন বহু বছর—যেখানে থাকবে তাদের হাসি, আড্ডা, আর সেই অটুট বন্ধুত্বের সাক্ষ্য। সময় বয়ে যাবে, জীবন আরও বদলাবে, কিন্তু মনোহরদীর সেই বৃষ্টিভেজা বিকেল তাদের জীবনে থেকে যাবে চিরকাল—যেন এক পৃষ্ঠা, যা বন্ধ হলেও বারবার পড়তে ইচ্ছে করবে। তৌফিক সুলতান,প্রভাষক - ব্রেভ জুবিলেন্ট স্কলার্স অফ মনোহরদী মডেল কলেজ,(বি জে এস এম মডেল কলেজ)মনোহরদী, নরসিংদী। towfiqsultan.help@gmail.com 01301483833
    Love
    2
    1 Σχόλια 2 Μοιράστηκε 2χλμ. Views 1 Προεπισκόπηση
  • 0 Σχόλια 0 Μοιράστηκε 198 Views 0 Προεπισκόπηση
  • Al Mamun Gazi
    Al Mamun Gazi
    0 Σχόλια 0 Μοιράστηκε 200 Views 0 Προεπισκόπηση
Eidok App https://eidok.com